প্রধানমন্ত্রী আগেই জানিয়েছিলেন যে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কোনরূপ সমঝোতা বরদাস্ত করা হবে না এবং যারা এই নৃশংস হত্যা লীলার সাথে যুক্ত তাদের কাউকেই রেয়াত করা হবে না। ঠিক সেই কথা মতই বড়সড়ো পাঁচটি অ্যাকশন নিল ভারত।
পাঁচটি বড় অ্যাকশন এর ঘোষণা করলেন বিক্রম মিস্ত্রি যিনি ভারতের ফরেন সেক্রেটারি
- ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে থাকা হাজার ১৯৬০ সালে হওয়া হিন্দু জল চুক্তি বাতিল
- দুই দেশের হাইকমিশন বন্ধ করা হলে এবং সেখান থেকে কর্মীদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশে ফেরার কথা বলা হলো ।
- আটারি ও ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করা হলো।
- সমস্ত ভিসা বন্ধ করে দেয়া হলো এবং যা ইসু করা হয়েছে তা বাতিল করা হলো।
- ঘোষণা করা হলো সন্ত্রাসবাদীর বিরুদ্ধে সমস্ত রকমের জিরো টলারেন্স নীতি ভারত নেবে।
ভারতবর্ষ ও পাকিস্তান এর আটারি ওয়াঘা সীমান্ত যা দুই দেশের মধ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ পথ বলে ধরা হয় বুধবার থেকেই অর্থাৎ আজ থেকেই সেটি বন্ধ করে দেওয়া হলো ও সমস্ত সেনাবাহিনীর বিভাগকে হাই এলার্ট জারি করে চরম সর্তকতা অবলম্বন করার নির্দেশ দেয়া হলো।
এছাড়াও যে সমস্ত পাকিস্তানি নাগরিক বৈধ কাগজপত্র নিয়ে এদেশে এসেছেন তাদের সবাইকে ১ মে ২০২৫ এর মধ্যে তাদের নিজের দেশে অর্থাৎ পাকিস্তানের ফেরত যাওয়ার কথা ঘোষণা করা হলো।
কেউ বলা হয়েছে পাকিস্তানী নাগরিকদের আর কোন মতেই ভারতবর্ষে আসার অনুমতি দেওয়া হবে না অর্থাৎ যারা SAARC VISA EXEMPTION SCHEME (SVES) এর মাধ্যমে ভারতে আসার অনুমতি পান সেটি আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হলো। যারা এই (SVES) ভিসার মাধ্যমে ভারতবর্ষে এসেছেন তাদেরকে ৪৮ ঘন্টা সময় দেয়া হলো দেশ ছেড়ে বেরিয়ে যেতে।
ভারতের পক্ষ ঘোষণা করল যে ভারত সিন্ধু জল চুক্তি কে সাসপেন্ড করছে যেটি ১৯৬০ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চুক্তি হয়েছিল।
এই চুক্তি অনুযায়ী বলা ছিল যে দক্ষিণের নদী অর্থাৎ ইন্দাস, ঝিলাম,চেনাব নদীর জল এর ওপর বেশি অধিকার থাকবে পাকিস্তান এর কাছে আর অন্যদিকে পূর্বদিকে নদী অর্থাৎরবি,বিয়াস,সুতলেজ (sutlej ) এর উপর বেশি কর্তৃত্ব থাকবে ভারতের, তবে পাকিস্তান ভারতের এই নদী গুলোর জল ও ব্যবহার করতে পারবে।
এই চুক্তি সংঘটিত হয়েছিল বিশ্ব ব্যাংকের মধ্যস্থতায়।
এবং এই চুক্তিতে সই করেছিলেন ভারতের পক্ষ থেকে জহরলাল নেহেরু ও পাকিস্তানের পক্ষ থেকে আইয়ুব খান। এখন কথা হচ্ছে দেখে মনে হতে পারে এই চুক্তি দুটো দেশের মধ্যে সমবন্টিত হয়েছে। কিন্তু আদৌ কেউ তা নয়।
দক্ষিণ দিকে নদীগুলি অর্থাৎ ইন্দাস, ঝিলাম ও চেনাব প্রায় আশি শতাংশ জল বহন করে ইন্দাস রিভার সিস্টেমের মধ্যে আর ভারতের পাওয়া নদীগুলি অর্থাৎ রবি, বিয়াস,সুতলেজ (sutlej ) মাত্র বাকি শতাংশ জল বহন করে।
তাই বলা যেতে পারে এই চুক্তির মাধ্যমে পাকিস্তানেরই বেশি লাভ হয়েছে। হাজার ১৯৬৫ সালের যুদ্ধ কিংবা 1999 সালে সংঘটিত হওয়া কারগিল যুদ্ধের সময়ও এই চুক্তি কোনরূপ ভঙ্গ করা হয়নি। তবে উড়ি হামলার পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন জল আর রক্ত একসাথে বইতে পারে না তখন থেকেই এই চুক্তির বন্ধ হওয়ার কথা সামনে আসছিল।
এতদিন পরে রক্তের বিনিময় সেই চুক্তি বন্ধ করা হলো ভারতের পক্ষ থেকে। পেহেলগাওঁ তে ঘটে যাওয়া ২৮ টি তরতাজা প্রাণের বিনিময়ে।
ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে সমস্ত রকম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে চাইছে তাই ভারতবর্ষের মাটিতে থাকা পাকিস্তানের হাইকমিশন কে যারা দিল্লিতে বসে কূটনৈতিক কার্যকলাপ চালান তাদেরকে দেশে ফিরে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে অন্যদিকে ভারত বর্ষের যে সমস্ত হাই কমিশন ও লোকজন কে ভারতে ফিরে আসার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ভারত সমস্ত রকম আনুষ্ঠানিক ভাবে হওয়া সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করল।
ইতিমধ্যে জম্মু-কাশ্মীর সরকার ঘোষণা করেছে যে বা যারা এই জঙ্গিদের সম্পর্কে তথ্য দিতে পারবে ও তাদের ধরিয়ে দিতে পারবে তাদেরকে প্রায় কুড়ি লক্ষ টাকা দেওয়া হবে যারাই তথ্য দেবেন তাদের পরিচয় সম্পূর্ণ হবে গোপন রাখা হবে।
এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না কাশ্মীর এমন একটি জায়গা যেখানে চোখ জুড়ানো দৃশ্য মানুষদের কে বারবার টেনে নিয়ে যায় এই ভূস্বর্গ তে।
তাই যখন বাতাসে বারুদের গন্ধ থাকে নিথর লাশ পড়ে থাকে ভূস্বর্গ কাশ্মীরে যেখানে পর্যটন একমাত্র রোজগার করার উপায় তা শুধুমাত্র ভ্রমণপিপাসু মানুষদেরকে আনন্দ দেয় তাই নয়, আনন্দ দেয় সেখানে থাকা মানুষজনদেরও তাই তারাও এই সমস্যার দ্রুত সমাধান চান তারা চান দ্রুত, যত দ্রুত সম্ভব এ নৃশংস হত্যা লীলার পেছনে যাদের হাত রয়েছে যারা সরাসরি যুক্ত তারা যেন চরম শাস্তি পায় ও ভূস্বর্গ যেন সর্গদ্বার হওয়া রক্ষা পায়। এ শুধু কাশ্মীরের নয় এ আপামর ভারতবাসীর ঐকান্তিক কাম্য।

